মঙ্গলবার, ১০ মার্চ, ২০২০


“ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে
 অভিযোগ করুন”
কোন ভোক্তা প্রতারিত হলে ঘটনার এক মাসের মধ্যে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরে অভিযোগ করুনঃ 
১। অনলাইনেঃ যথাযথ নির্দেশনা মেনে পাঁচ ধাপের ফর্মটি পূরণ করুন। অনলাইন লিঙ্কঃ http://online.forms.gov.bd/onlineApplications/apply/MTMyLzMzLzI2/
মনে রাখবেন, অসম্পুর্ণ ফর্ম গ্রহণযোগ্য না।
২। দ্বিতীয় পদ্ধতি ই-মেইল অথবা সরাসরি ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর বা নিকটস্থ অফিসে জমা দিতে পারেন।
প্রথমে অভিযোগ ফর্মটি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করুন। ফর্মটির লিঙ্কঃ
অথবা ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট থেকেও ডাউনলোড করতে পারেন। প্রিন্ট করার পর ফর্মটি পূরণ হাতে করুন। প্রমাণ স্বরূপ যা রেখেছেন (হতে পারে মানি রিসিপ্ট, মেয়াদোত্তীর্ন পন্যের ছবি ইত্যাদি) তারও ছবি তুলুন। ছবিগুলো পাঠিয়ে দিন ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের ই-মেইলেঃ nccc@dncrp.gov.bd ফোন: ০১৭৭৭ ৭৫৩৬৬৮
 
যদি ই-মেইল রিসিভ হয় ৭ দিনের মধ্যে আপনাকে তলব করবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আরোপিত জরিমানার ২৫% পাবেন অভিযোগকারী।
জনস্বার্থেঃ কনজুমার ইয়ুথ বাংলাদেশ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।

সোমবার, ১ অক্টোবর, ২০১৮

আত্ম-কথা

বহমান বাতাসের হালে নিজেকে ভাসিয়ে দিবেন না। সাময়ীক আনন্দ, হতে পারে সারা জীবন ক্রন্দনের কারন।

বুধবার, ২০ জুন, ২০১৮

প্রেয়সীর পানে সিয়াম


      প্রেয়সীর পানে সিয়াম

         সিয়াম ও সায়মার দাম্পত্য জীবন শুরু হয় এক বছর পূর্বে সিয়াম একটি কোম্পানিতে চাকরি করে,  অত্যন্ত ধার্মিক ও সমাজ সংস্কারক হিসেবে পরচিত। আগ্রহের সাথে সমাজের উন্নয়নমূলক কাজ করার পাশাপাশি অন্যদেরও উৎসাহ প্রদান করে। যার দরুন এলাকায় তার খুব নাম। এলাকার একজন মানুষ তাকে না চেনাই হবে বিষ্ময়কর ব্যাপার......।
       সিয়াম ধার্মিক হলেও , তার স্ত্রী সায়মা খুব একটা ধার্মিক না এতে করে বাহ্যিকভাবে সিয়াম দুঃখ প্রকাশ না করলেও মনের কষ্ট থেকে একেবারেই বঞ্চিত নয় তবে সে মনে প্রাণে বিশ্বাস করে, সায়মাও একদিন সঠিক পথের দিশা পাবে………
       আজ তাদের দাম্পত্য জীবনের এক বছর পূর্ণ হল অফিসে বসে সিয়াম ভাবছে আজকের এই বিশেষ দিনে সে তার প্রিয়তমাকে কি উপহার দিবে ?  এও ভাবছে, নিশ্চয় সায়মাও তার মতো করেই ভাবছে!! অনেক্ষণ চিন্তা করার পর সিয়াম ঠিক করলো একটা বই গিফট করবে বইটি হলো, “ হযরত ফাতিমা (রাঃ) র জীবনী এর পেছনে দুটি কারন আছেঃ
         স্ত্রীকে উপহার দেওয়া।।
         তাকে ধার্মিক পথ দেখানোর একটি হাতিয়ারও পাওয়া
পরিকল্পনাটি করে সিয়াম খুবই তৃপ্তি পেলো কারন, ঢিল একটা হলেও টার্গেট করা পাখি দুইটা
      সন্ধ্যা ৭টার দিকে ড্রইং রুমে বসে সায়মা টিভি দেখছিলো এমন সময় কলিং বেল বেজে উঠলো দরজা খুলেই তো সায়মা অবাক! হাতে ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সিয়াম। 

কি ব্যাপার ! হটাৎ তোমার হাতে ফুল কেন?”
আর বলোনা ! আসার পথে এক সুন্দরী মেয়ে এই ফুলটি আমার হাতে দিয়ে I love you ‘ বলেই চলে যায় কি আর করার ! আমিও সোজা তোমার কাছে হাজির, মেয়েটির আহ্বানে সাড়া দেওয়া যায় কি-না পরামর্শ নিতে
ফাজলামো আমার সাথে ! কাহিনী কী বলতো !”
ট্রাই করে দেখো আঁচ করতে পারো কি-না??”
অতো লুকোচুরি করার কি দরকার , বলে ফেলো ফাটা-ফাট !! “
“ এতো সহজে কি বলা যায় !!!! “
“ ওহো…… আমার মাথায় কিছু আসছে না , বলনা প্লিজ…!”
“ Happy marriage day! Many many happy returns of the day”, ফুল বাড়িয়ে বলেই সিয়াম মুচকি হাঁসলো……।
“ Wow….!! I am so happy! আজকের এই বিশেষ দিনকে আমি ভুলেই গিয়েছিলাম।“, ফুল হাতে নিয়ে অনেকটা অনুতাপের সুরেই বললো সায়মা।
 শার্টের কলার মৃদু টেনে সিয়াম বলল, “ হু……। আমি জিতে গেছি।“
“ ঠিক আছে, হার মেনে নিলাম!”, সায়মার কন্ঠে বিরক্তির সুর।
“ আরে…! মন খারাপ করোনা লক্ষীতি ? পরের বার তুমি জিতবে!”
“ হয়েছে, হয়েছে……..! আর পঁচাতে হবে না! তুমি ফ্রেশ হয়ে কিছুক্ষণ রেস্ট নাও। টেবিলে খাবার দিচ্ছি এক সাথে খাবো”, সায়মার কন্ঠে অভিমানের সুর। সায়মা রান্না ঘরের দিকে চলে যায়।
      সিয়াম রুমে গিয়ে ফ্রেশ হলো। তার পর ড্রয়িং রুমে এসে বসলো।
      কিছুক্ষণ পরে সায়মা এসে জিজ্ঞেস করলো,
” তুমি রেডি ?”
“ হু…। তুমিও কি রেডি ?”
“ কেন?”
“ বলছি, চোখ বন্ধ করো।“
“ ইশশ...! তুমি যে কতো ঢং করো...! বন্ধ করলাম।“
হাত বাড়াও…!”
“ আবার হাতও বাড়াতে হবে…! এই নাও।“
       সিয়াম পকেট থেকে একটি ছোট প্যাকেট বের করলো। প্যাকেট খুলে একটি ঘড়ি বের করে প্রিয় সহধর্মীনীর হাতে পরিয়ে দিলো। তার পর গিফট পেপারে মোড়া একটি বই দিয়ে বললো, “ এবার চোখ খোল।“
       “ খুব সুন্দর ঘড়ি! আমার পছন্দ হয়েছে। সত্যি,  তোমার পছন্দ আছে।“, বিস্ময় প্রকাশ করে সায়মা।
      “ হু… হয়েছে। প্রশংসার ফুলঝুরি বন্ধ করো। এখন বল, গিফট কি শুধু নিবে? দিবে না!”
      “ গিফট চাও ? কি গিফট নিবে?”
      “ তুমি যা দাও। লজ্জা পেলেও সাহস করে নিয়ে নিবো।“
একটি খালি বয়োম এগিয়ে মুচকি হেঁসে সায়মা বললো,” তোমার জন্য বয়োম ভর্তি ভালবাসা!”
     “ ফাজলামো করো! এন্টি ফাজলামো করলে কেমন হবে?”
     “ থাক, লাগবে না। এখন বলো এটা কি বই?”
     “ আমি বলে দিলে ইন্টারেস্ট কমে যাবেনা?”
     “ তোমার সাথে যুক্তিতে পারব না। পরে দেখে নিবো।“
     “ শুধু দেখবে ! পড়বে না?”
     “ পড়েও নিবো। এখন চলো খাবে।“, মৃদু হেঁসে বললো সায়মা।
     “ চলো……………।“
 
খাওয়া শেষে দু-জনে ঘুমানোর জন্য রুমে গেলে সিয়াম বলে উঠলো, “ সায়মা, তোমাকে একটা সত্য কথা বলতে চাই।“
     “ বলো।“
     “খুব ভয় করছে!”
    “ কেনো?”
    “ যদি রেগে যাও।“
    “ আচ্ছা, রাগবো না বলো।“
    “ একটা মেয়ে আমাকে খুব ভালোবাসে। অর্থাৎ আমার গার্ল-ফ্রেন্ড আছে।“
    “ কী………!”
    “ রাগ করেনা লক্ষীতি। মেয়েটা খুবই সুন্দর এবং আমাকে প্রচন্ড ভালোবাসে। ওকে তোমারও ভালো লাগবে।“
     “ কে সেই মেয়ে, যে আমার সাথে ভাগ বসায়?”, কিছুটা বিস্ময়ের সুরে বলে সায়মা।
     “ এই যে রেগে গেলে । কথায় আছে, রেগে গেলে তো হেরে গেলে। তুমি কি হারতে চাও?”
    “ কখনোই না।পরিচয় দাও আমি তাকে দেখে নিবো।“
    “ আমি থাকতে তুমি তাকে কিছুই করতে পারবে না।“
    সেটা পরে দেখা যাবে, আগে তার পরিচয় দাও।“
    “ ভ্যাবাচ্যাকা খাবে না-তো?”
    “ না, বরং আনন্দিত হবো যে তুমি আমায় সাহায্য করেছো।“, মৃদু হেঁসে জবাব দিলো সায়মা।
    “ তাহলে শুন, মেয়েটার নাম সায়মা। এই মুহূর্তে আমার পাসে বসে আছে!”
    “ হা হা হা......। জানতাম! তুমি এটাই বলবে। তুমি এতো দুষ্টু কেনো? তাই বলে গার্ল-ফ্রেন্ড বলবে!”, সিয়ামের বুকে কিল দিতে দিতে লজ্জায়-রাঙ্গা সায়মার জিজ্ঞাশা।“
     “ তুমি দুষ্টুমি বুঝো বলে।“
     “ গার্ল-ফ্রেন্ড এর কি বলবে?”
     “ আরে ! জীবনে কোন বেগানা মেয়ের সাথে প্রেম করিনি। সমস্ত ভালোবাসা স্ত্রীর জন্য রেখেছি। হৃদয়ের সমস্ত ভালোবাসা তাকে উজাড় করে দেবো বলে! তাই তুমি আমার গার্ল-ফ্রেন্ড।“
    “ তাই বুঝি?”
    “ হু……।”
      আমি ধন্য তোমার মতো......”, সায়মা কথা শেষ করার আগেই সিয়াম বাঁধা দিয়ে বললো, 
     “ হয়েছে, আর প্রশংসা করা লাগবে না। এখন ঘুমাও।“
     “ ঠিক আছে, ঘুমিয়ে পড়লাম।“

         পরের দিন সিয়াম বরাবরের ন্যায় ভোর বেলা উঠে নামায পড়ে নিলো। কিছুক্ষণ কোরআন তেলাওয়াত করে ব্যায়াম করার জন্য বের হলো। ফিরে এসে নাস্তা করে অফিসে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিলো।
          “ সায়মা……।“
          “ হ্যাঁ…………, আসছি………।“
          “ অফিসে যাচ্ছি। নিজের খেয়াল রেখো। খোদ হাফেজ……।“
          “ খোদ হাফেজ……!”
          সিয়াম বাইকে বসলো, স্টার্ট দিলো। বাইক চলতে শুরু করলো…। সিয়ামের পথ চলার চলমান ছবির দিকে অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে সায়মা। প্রচন্ড আবেগী সেই চাহনি। যে চাহনীতে নেই কোনো কৃত্রিমতা……।
           রান্না-বান্না শেষে বেলা এগারোটার দিকে সায়মা প্রায়ই অবসর থাকে। আজও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। ভাবছে কি করা যায়? হঠাৎ সিয়ামের দেওয়া গিফট সেই বইটির কথা মনে পরলো। যেই ভাবা সেই কাজ। আলমারি থেকে বইটা নিয়ে মোড়ক উন্মোচন করলো। কাভার পেজ উল্টানোর পর হস্ত লিখিত একটি বাক্য সায়মার মনোযোগ আকর্ষ্ণ করলো। চিনতে পারলো, অবশ্যই সিয়ামের লেখা। লেখাটি হলো,” হে আল্লাহ! আমাদের উভয় কে দুনিয়া ও আখেরাতে কল্যান দান করুন। আমিন!”
           অনেকটা আন্মনা হয়ে পড়ে সায়মা। নিজের অজান্তেই বলে ফেলে,” আমিন!”
           পরের পেজ উল্টালো সায়মা। ডাবল কোটেশনের মধ্যে থাকা একটি লেখা পুনরায় তার দৃষ্টি আকর্ষণ করলো,
” সময়ের কসম! নিশ্চয় মানুষ ক্ষতির মধ্যে আছে। কিন্তু, তারা ব্যতীত যারা ইমান আনে এবং যারা সৎকাজ করে ও একে অন্যকে সত্যের বা হকের প্রতি উপদেশ দিতে থাকে এবং ধৈর্যের উপর উপদেশ দিতে থাকে।“ ( সূরা আসর )
          আন্মনা ভাব এখনো কাটেনি সায়ামার। ৫-৭ মিনিট পার হওয়ার পর দীর্ঘশ্বাস ফেলে সায়মা পরবর্তী পেজ পড়ে নিলো। দ্বিতীয় পেজ, তৃতীয়পেজ, চতুর্থ পেজ....... এভাবে পুরো বই পড়া শেষ করে ফেললো। বইটি পড়ার সময় সায়মা কোথাও আনন্দিত, কোথাও দুঃখিত এমনকি চোখের পানি পর্যন্ত ফেলতে হয়েছে।
           পড়া শেষ হলেও চিন্তার রাজ্য থেকে এখনো ফেরা হয়নি সায়মার । ভাবছিলো, বিশ্ব নবির (সঃ) কন্যা হয়েও হযরত ফাতেমা (রাঃ) নিজ হাতে কাজ করেছেন, স্বামীর খেদমত করেছেন এমনকি না খেয়েও দিন গুণতে হয়েছে! তারা এতটাই দায়িত্ববান ছিলো! আর আমি! আমি খুব খারাপ!
          চেতনায় ফিরে সায়মা ঘড়ির দিকে তাকিয়েই বিস্মিত হলো! “বেলা সাড়ে তিনটা বাজে! কখন যে দুপুর পার হয়ে গেলো টেরই পেলাম না! নাহ! নামাজ পড়তে হবে। নিজের দায়িত্বের ব্যাপারে আরো সচেতন হব। ইনশাল্লাহ!”
           জোহরের নামাজ শেষে সায়মা মোবাইল হাতে নিলো। ডায়াল করলো সিয়ামের নাম্বারে । রিং বাজছে ওপারে…
          “ আসসালামুয়ালাইকুম……!”
          “ ওয়ালাইকুমুসসালাম। হ্যাঁ, সায়মা বলো…।“
          “ বাবা অসুস্থ , দেখে আসা দরকার।“
          “ সমস্যা নেই, যাও। দুজনে এক সাথে গেলে আরো ভালো লাগতো। অফিসে জরুরি কাজ আছে বলে যেতে পারছি না। দোয়া করি, বাবা যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠে। তাড়াতাড়ি ফিরে এসো……।“
         “ আমিন! খোদা হাফেজ!”
ফেরার পথে সায়মা অনেক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছিলো, কিন্তু গাড়ি পাচ্ছিলো না। অপেক্ষার সীমা ছুঁয়ে গাড়ি আসে। স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলে সায়মা গাড়িতে উঠে বসে।
          এদিকে বাসায় ফিরে সিয়াম খুবই চিন্তিত। এতক্ষণে সায়মা বাসায় থাকার কথা। শশুর বাড়িতে ফোন করে জানলো, বাসা থেকে বেরিয়েছে অনেক আগে। ওর মোবাইলেও কল করেছিলো সিয়াম, কিন্তু বন্ধ।  তাহলে...... দেরি হচ্ছে কেন?......কোন সমস্যা হয়নি তো.........?  এভাবে সাত-পাঁচ ভাবছিলো সিয়াম। হঠাৎ কলিং বেল বেজে উঠলে সিয়াম দ্রুত গিয়ে দরজার ফুঁটোয় চোঁখ রাখে এবং সায়মা কে দেখে তার হৃদয় প্রশান্তিতে ভরে যায়। দরজা খুলে দিলো...
          “এসো”
নি:শব্দে ভেতরে প্রবেশ করে সায়মা। তাকে অনেকটা ভয়ার্ত লাগছিলো।
          “একটা ভদ্র পরিবারের বউ হয়ে এতো রাতে বাসায় ফিরেছো, লজ্জা করে না?”
          চমকে উঠে সায়মা।
          “এ সব বলে তোমাকে শ্বাসাবো ভেবেছো!“
          “তাহলে কেনো বলেছো?আমাকে ভয় দেখানোর জন্য!”
          “এইতো! বুঝে ফেলেছো!”
          “ভালো বুঝাতে পারো বলে! দুষ্টামি করলে গুণাহ হয় না বুঝি!”, সায়মার মুখে মুচকি হাসি।
          “তাহলে একটি বাস্তব গল্প শুন। একদিন আলি (রাঃ) কে নিয়ে রাসুল (সঃ) খেজুর খাচ্ছিলেন। আলি (রাঃ) খেজুর খেয়ে বিচিগুলো পাশেই রাখছিলেন। রাসুল (সঃ) ও বিচিগুলো একই জায়গায় রেখেছিলেন। খাওয়া শেষে রাসুল (সঃ) বলেন, হে আলি! তুমি এতোগুলো খেজুর খেয়েছো! আলি (রাঃ) জবাবে বলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনিতো বিচি-সহ খেয়ে ফেলেছেন!”
          “হা হা হা......। খুব সুন্দর ঘটনা বললে।“, মৃদু হেঁসে বলে সায়মা।
          “এবার তোমার প্রশ্নের জবাব হলো, দুষ্টামির মাঝে যতক্ষণ পর্যন্ত বাতিল কে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না ততক্ষণ পর্যন্ত গুণাহ হবে না। বুঝেছো...?“, গম্ভীর কণ্ঠ সিয়ামের।
          “হু...।“, ধীর্ঘঃশ্বাস ফেলে সায়মা।
          “চলো। তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও, খাবো।“
          “ঠিক আছে,চলো।“
          ফ্রেশ হয়ে সায়মা ডাইনিং টেবিল দেখেই অবাক! সব ধরনের খাবার সুন্দর করে সাজানো! জিগাংশু দৃষ্টিতে তাকায় সায়মা…
          “ তুমি অনেক দূর থেকে আসছো, ক্লান্ত থাকবে। ভাবলাম, খাবার রেডি করেই রাখি।“  
           “থাক, নিজের ঢোল পেটানো লাগবে না।সত্যি! আমার গর্ব হচ্ছে, কারণ পৃথীবির সবচেয়ে ভালো স্বামী আমার। খেতে বসি...।
পানি খাওয়ার সময় সিয়াম গ্লাসের ঠিক ঐ জায়গায় ঠোঁট রাখে যে জায়গায় ঠোট রেখে সায়মা পানি-পান করেছিলো।
           “এটা কি?”
          “ভালোবাসা! এটা রাসূল (সঃ) এর সুন্নাত।“
          “সোবাহানাল্লাহ!”, বলে সিয়ামের পাতে কলিজা তুলে দেয় এবং নিজের পাতেও নেয় সায়মা।
          “বাবার শরীর কেমন দেখলে?”, খেতে খেতে জিজ্ঞেশ করে সিয়াম।
          “এখন মোটামুটি ভালো।“
          “আলহামদুলিল্লাহ বলবে না?”, হেঁসে বলে সিয়াম।
          “আলহামদুলিল্লাহ!”,বলে সায়মাও হাঁসে।
খাওয়া শেষে সিয়াম জিজ্ঞেশ করে,
          ” এশার নামাজ পড়া হয়নি নিশ্চয়?“
          “তাই তো!আমি ভুলেই গিয়েছিলাম। চলো পড়ে নিই।“
          “মসজিদ থেকে পড়ে এসেছি, তুমি পড়ে নাও। আমি বেডরুমে গেলাম।“
নামাজ শেষে বেডরুমে গেলে সিয়াম জিজ্ঞেশ করে,
           “বইটি পড়েছো?”
           “হু...।“
          “কেমন লেগেছে?”
          “বিশ্বাস করো! এমন বই আমি কখনো পড়িনি... । যে বই পড়লে চোখের পানি পর্যন্ত চলে আসে।“
          তুমি অত্যন্ত আবেগী!”
          “আবেগ নয়, বল হৃদয়ের ভাষা!”
          “আলহামদুলিল্লাহ! এসো আল্লাহর দরবারে হাত তুলি”
উভয়ে হাত তুলে দোয়া করে।
          ”আল্লাহ! আমাদেরকে হেদায়েতের পথ থেকে বিচ্যুত করো না এবং দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যান দান করুন। আমিন!”, বলে সিয়াম মোনাজাত শেষ করে।
          “আমার অনেক দিনের ইচ্ছে ছিলো, তোমাকে স্বরচিত গান শোনাবো। কখনো সুযোগ পাই নি। শুনবে?”
          “তোমার স্বরচিত গান! অবশ্যই শুনবো।“
          “তাহলে শুন......”, বলে সিয়াম নড়ে-চড়ে বসে।

“চন্দ্র কে বলি তুমি শুভ্র কেনো?
সূর্যকে বলি তুমি অগ্নিময় কেনো?
............................................................
............................................................
............................................................
............................................................
করুণার আধার সেই আল্লাহরই দান
তিনিই রহিম, রহমান!”

             ঘুমিয়ে পড়েছে সায়মা। সিয়াম জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে আর মনে মনে বলছে, ” জ্যোৎস্না-প্লাবিত রাত এতো সুন্দর! সত্যিই, মহান আল্লাহর অসীম ক্ষমতা! সৃষ্টির বৈচিত্র্যতা অপূর্ব! আলহামদুলিল্লাহ!”
          আত্ম-তৃপ্তিতে সিয়ামের চোখ বুঝে আসে। এক সময় ঘুমিয়েও পড়ে। সিয়াম ও সায়মা-সহ সবাই নিস্তব্ধ রাতে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। অপূর্ব সৃষ্টি কৌসুলী মহান আল্লাহ-র কোন ঘুম নেই। তন্দ্রা তাকে স্পর্শ ও করতে পারে না। প্রতিটি মূহূর্তে করুণা ছড়িয়ে দিচ্ছেন এই সবুজ-শ্যামল পৃথিবীতে………।
     

সোমবার, ৪ জুন, ২০১৮

বৃষ্টি-ভেজা ঘুম

বৃষ্টি-ভেজা ঘুম
মোঃ ইয়াছিন আরাফাত (রাজু)

আকাশের গুড়ুম-গাড়ুম শব্দে 
ভেঙ্গে গেলো ঘুম,
উঠে দেখি বাইরে 
বৃষ্টি হচ্ছে ভীষম। 

টাপুর-টুপুর শব্দে
মুখরিত পরিবেশ,
বৃষ্টির ফোঁটার সৌরভে
উচ্ছসিত সবুজ ঘাস।

বর্ষার উত্তরালী বাতাসে
আনন্দে নাচছে গাছ-পালা,
ঠুশ-ঠাশ বিধ্বংসী শব্দে
ভাংছে ডাল-পালা।

কালবৈশাখী ঝড়ে
প্লাবিত বিস্তীর্ণ বিল,
ডুবন্ত মাছগুলো যেন
হাঁসছে খিল-খিল।

শাঁ-শাঁ শব্দে
বইছে ঠান্ডা বাতাস,
ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ায় আমি
ভীষণ হতাশ!